মাওলানা মনোয়ার আলম একাধারে ছিলেন একজন ইসলামিক গবেষক , হোমিও চিকিৎসক, কবি, ধর্ম প্রচারক ও আরবি প্রভাষক । পড়াশোনা শুরু হয় স্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষার সফলভাবে উত্তীর্ণ হওয়ার পরে কওমি মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে আরবি বিভাগের উপর পাণ্ডিত্য অর্জন করেন কওমি থেকে টাইটেল পাস করে আলিয়া মাদ্রাসা থেকে কামিল পরীক্ষায় ফার্স্ট ডিভিশনে উত্তীর্ণ হন।
জযদিও মনোয়ার আলম সাহেবের ছোটবেলা অন্যান্য আর দশটা ছেলেদের মতন জীবন শুরু হয়নি অনেক কষ্ট ও মানুষের তিরস্কারের মধ্য দিয়ে জীবনের প্রথম লেখাপড়া জীবন শুরু হয়।
ব্যক্তিগত তথ্য মনোয়ার আলমঃ
পুরো নাম:মোঃ মনোয়ার আলম
জন্ম তারিখ: 1 এপ্রিল 1959
জন্মস্থান: চিলাউড়া মাঝপাড়া, জগন্নাথপুর ,সুনামগঞ্জ
মৃত্যু: ৯ মে ২০২১
মৃত্যুর স্থান: নিজ বাড়ি
শিক্ষা: সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাস
পেশা: শিক্ষক, হোমিও চিকিৎসক, কবি ও ধর্ম প্রচারক,
সক্রিয় বয়স: ১৯৫৯-২০২১
ধর্ম :সুন্নি মুসলিম
মাযহাব : হানাফী ধর্মীয় শিক্ষক: শাহ সূফী মোহাম্মদ আলী রায়পুরী, মাওলানা আমিনুদ্দীন শায়খে
কাতিয়া , বাবুনগরী শেখ সাবেব,
মাওলানা মনোয়ার আলম সাহেবের প্রাথমিক ও শিক্ষা জীবনঃ
কালাই উল্লাহ সওদাগর এর পুত্র মনোয়ার আলম ১৯৫৯ সালের ০১ এপ্রিল পূর্ব পাকিস্তান এর বর্তমান বাংলাদেশ সুনামগঞ্জ,জগন্নাথপুর, চিলাউড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি কালাই উল্লাহ এবং সারবান বিবি এর একটি সুন্নি মুসলিম কৃষক পরিবারের জন্মগ্রহণ করেন তিনি চার ভাইদের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন তিনি এবং 3 বোন ছিল ।
তার বাবা কালাই উল্লাহ সওদাগর একজন সম্ভ্রান্ত কৃষক ছিলেন তার বয়স খুবই অল্প তখন পিতা মারা যান। অল্প বয়সে পিতা মারা যাওয়া কারণে পরিবার অন্যান্য সদস্যদের হাতে দায়িত্ব চলে আসে যার কারণে পড়াশোনা শুরু করতে অনেক বিলম্ব হয়। স্নেহের বড় ভাই সুরুজ আলী পড়াশোনার প্রতি অনেক আগ্রহ দেখে সম্ভবত আট বছর বয়সে চিলাউড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দেন।
সেইখান থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করে সফলভাবে উত্তীর্ণ হন।
উচ্চ মাধ্যমিক পড়ার জন্য গ্রামে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল না প্রায় ৮ মাইল পায়ে হেঁটে প্রতিদিন জগন্নাথপুর স্বরূপ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতেন।
পড়াশুনা ভাল থাকায় শিক্ষকরা অনেক ভালোবাসতেন স্কুলের টিচাররা পড়া দিলে বাড়িতে এসে পড়তে বসলে পরিবারের লোকদের একেক রকম কটুক্তি শুনতে হতো যেহেতু কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ যার কারণে পড়াশোনার প্রতি কারোর কোন আগ্রহী ছিল না বাতি জ্বালিয়ে পড়তে দিত না কেউ তাই খুব ভুরে উটে পড়াশোনা করতে হতো।
মনোয়ার আলম সাহেবের কর্মজীবনঃ
তিনি জীবনের শুরুটা করেন হোমিও চিকিৎসা দিয়ে হোমিও চিকিৎসার সাথে প্রায় পাঁচ বৎসর সক্রিয়ভাবে ছিলেন।
পরবর্তীতে রানীগঞ্জ একটি মসজিদের ইমামতি নেন।
রানাপিং আরাবিয়া হুসাইনিয়া মাদ্রাসা থাকা কালিং মরহুম পীরে কামেল আল্লামা শাহ সূফী মোহাম্মদ আলী রায়পুরী(রহঃ),লামারগ্রাম।
এর হাতে বায়াত গহন করেন উনার দেখানো পথে চলার কারণে মসজিদে থাকা অবস্থায় আধ্যাত্মিক শক্তি নিজের মধ্যে চলে আসে নিজের আধ্যাত্মিক শক্তির মাধ্যমে অনেক অসাধ্য কাজ সাধন করেন।
উল্লেখযোগ্য ঘটনার মধ্যে পির সাহেব ও মুরিদান গন একসাথে সবাই মোরাকাবা করেছিলেন এবং যে যার মতন জিকির করতে করতে হঠাৎ বেহুস হয়ে পড়ে যান এবং স্বপ্নের মধ্যে দেখেন একজন মহিলা এবং দুই পাশে দুইজন সুন্দর ছেলে দাড়িয়ে আছেন এই ঘটনা সাহেবকে বলার পরে উনি সব শুনে বললেন মহিলা হলেন হযরত ফাতেমা (রা) ও দুই পাশে দুই ছেলে একজন হলেন হাসান (রা) ও হুসাইন (রা) তাছাড়া আরও শত শত উল্লেখযোগ্য ঘটনা আছে যা বলতে নিষেধ করে গেছেন ।
মায়ের নিষেধ এর কারণে পরবর্তীতে আধ্যাত্মিক শক্তির মাধ্যমে কারো কোন চিকিৎসা করেন নাই।
সুদ ঘুষ হারাম হালাল নিয়ে কঠোর ফতোয়া দেওয়ার কারণে অনেকেরই গায়ে লাইগা যায় যার কারণে অনেকেই মনোয়ার আলম সাহেব এর বিরুদ্ধে লেগে শত্রুতা শুরু করেদে যার কারণে ইমামতি চাকরি ছেড়েদেন।
মাওলানা মনোয়ার আলম সাহেবের ব্যক্তিগত জীবনঃ
মনোয়ার সাহেব ১৯৭৯ সালের প্রথম দিকে হাজী আব্দুল মতলিব ও আজিজুন নেছা এর বড় মেয়ে আমিনা বেগম কে বিয়ে করেন।
রবের পক্ষ থেকে ঘর আলোকিত করে প্রথম কন্যা সন্তান হয় সন্তান এর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সৌদি আরবে চলে যান।
দেশে ফেরার পর একমাত্র পুত্র সন্তানের জন্ম হয় নয় মাস বয়সে এসে ইন্তেকাল করে । পরে আরও দুই ছেলে ও তিন মেয়ের জন্ম হয় সব মিলিয়ে 7 জন সন্তানের এর পিতা হন. বড় ছেলে হাসান আহমেদ একজন সফল ফ্রিল্যান্সার ও ছোট ছেলে হোসাইন সৈয়দপুর ফাজিল মাদ্রাসা পড়াশুনাতে ।
সাহিত্য সংস্কৃতিক অবদানঃ
মনোয়ার আলম সাহেব মৃত্যু আগ পর্যন্ত সাহিত্য চর্চা ও বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখি করে গিয়েছেন তিনি সব সময় বিভিন্ন ম্যাগাজিন পত্রিকা ও সাপ্তাহিক পত্রিকার মধ্যে তার লেখা প্রকাশন করে থাকতেন
উল্লেখযোগ্য কিছু প্রকাশনাঃ
রাজনৈতিক জীবনঃ
প্রত্যক্ষ ভাবে কোন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত ছিল না তবে বিএনপির রাজনীতিকে পছন্দ করতেন।
দলগত ভাবে কোন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পর্ক ছিল না আওয়ামী লীগ বিএনপি সহ জাতীয় পার্টির সকল রাজনীতিকদের সাথে ভালো সম্পর্ক ছিল জীবনে কখনো শুনিনি কোন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ বা রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে কথা বলতে।
স্বভাব-চরিত্রঃ
তিনি ছিলেন একজন কোমল হৃদয়ের অধিকারী মুখের মধ্যে থাকত সবসময় হাসিখুশি কারো সাথে কথা বলতেন সব সময় হাসিমুখে কথা বলতেন যার কারণে সবাই ওনাকে অনেক পছন্দ করত ।
তবে ধর্মীয় বিষয়ে কোনো কথা বললে সরাসরি কোরআন হাদিস যা বলে সরাসরি বলে দিতেন যার কারণে অনেক মানুষই ওনাকে পছন্দ করত না সত্য কথা অনেক থিতে হয়। উনার এই সত্যবাদী কথার কারণে অধিক মানুষ ওই পছন্দ করত।
ইন্তেকাল ও দাফনঃ
চাকরি থেকে অবসর হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই ব্রেইন স্টর্ক করেন হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসা করে অনেকাংশই সুস্থ হয়ে যান কিন্তু এই রোগের কারণে ২০২১ সালের ৯ই মে ২৭ শে রমজান দুপুর ০২ ঘটিকার সময় ইন্তেকাল করেন । রাত এগারোটার পরে দাফন করেছিল চিলাউড়া শাহী জামে মসজিদের পাশে শেষ দাফন করা হয়।
উপসংহারঃ
জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কঠিন লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে একজন আপোষহীন মানুষ হিসেবে জীবন পরিচালিত করেছেন মৃত্যু আগ পর্যন্ত দেশ ও ধর্ম সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌঁছানোর অনেক চেষ্টা করে গিয়েছেন জীবনের অনেক সময় প্রতিবেশীদের যন্ত্রণা নিয়ে চলতে হয়েছে তিনি শেষ পর্যন্ত অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করে গিয়েছেন।
পুত্রদের উদ্দেশ্য বলেনঃ