সেজদার একমাত্র মালিক বা হকদার মহান আল্লাহ তাআলা। তিনি ছাড়া আর কাউকে সেজদা করা জায়েয নেই। বর্তমান সময়ে অনেককে বলতে শোনা যায়, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে দেখা যায় একশ্রেণীর লোক ভক্তি-শ্রদ্ধার নামে পীরকে সেজদা করে। অনেকে আবার মাজারে বা দরগাহে সেজদায় লুটিয়ে পড়ে।
এ ধরণের পীর বা মাজারে সেজদাকারীরা শ্রদ্ধা-ভক্তির এ সেজদাকে জায়েজও বলে থাকেন। সেজদা প্রসঙ্গে কুরআন এবং হাদিসে রয়েছে সুস্পষ্ট নির্দেশনা। সেজদা প্রসঙ্গে কুরআনে এসেছে-
হাদিসে পাকে হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘আল্লাহ তাআলার অভিশাপ ইয়াহুদি ও নাসারাদের ওপর। তারা তাদের নবীগণের কবরকে সেজদার স্থান বানিয়েছে।’ (বুখারি)
হজরত জুনদুব রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তাঁর ইন্তেকালের তিনদিন আগে বলতে শুনেছি, সাবধান! তোমরা কবরকে সেজদার স্থান বানিও না। আমি তোমাদেরকে তা থেকে কঠোরভাবে নিষেধ করছি।’ (মুসলিম)
উল্লেখিত হাদিসদ্বয়ে প্রিয়নবি যেখানে নবীদের কবরকে সেজদার বানানোর কারণে প্রিয়নবি ইয়াহুদি ও নাসারাদেরকে অভিসম্পাত করেছেন। কবরকে সেজদার স্থান বানাতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। সেখানে বর্তমান সময়ে পীরের পায়ে, আসনে এবং কবরে সেজদা করাকে কল্যাণ লাভের উপায় নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। অথচ তা কতটা মারাত্মক তা ঈমানদার মুসলমান মাত্রই অনুমেয়।
কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে বুঝা যায় যে, পীর বা মাজারে যে কোনো ধরনে সেজদা করা হারাম। কোনোভাবেই তা বৈধ নয়। হাদিসে পাকে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেই নির্দেশনা জারি করেছেন।
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কারো জন্য (আল্লাহ ছাড়া) অন্য কাউকে সেজদা করা বৈধ নয়। যদি কারো (অন্যকে সেজদা করা বৈধ হতো তবে আমি স্ত্রীদেরকে তাদের স্বামীদের সেজদা করার আদেশ করতাম। কেননা আল্লাহ তাআলা স্ত্রীর উপর স্বামীর অনেক বড় হক ন্যস্ত করেছেন।’ (ইবনে হিব্বান, মুসনাদে আহমাদ)
পরিশেষে…
সেজদার উপযুক্ত একমাত্র আল্লাহ তাআলা। উদ্দেশ্য যা-ই হোক না কেন, আল্লাহ তাআলা ছাড়া অন্য কাউকে সেজদা করা সম্পূর্ণ হারাম। আর ইবাদতের উদ্দেশ্যে আল্লাহ ব্যতিত অন্য কাউকে সেজদা করলে সে মুশরিক হয়ে যাবে। আর গাইরুল্লাহকে সেজদা করা কুরআন-হাদিসে অকাট্য হারাম প্রমাণিত।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে শুধুমাত্র তারই সেজদা করার তাওফিক দান করুন। গায়রুল্লাহর সেজদা থেকে হেফাজত করুন। শিরকমুক্ত ঈমানের অধিকারী হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।